দলীয় পদ নিয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করলেন মেয়র রিন্টু
মোঃ রুবেল মিয়া, লালমনিরহাট প্রতিনিধ।
অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জেলা আ’লীগের ১নং সাংগঠনিক পদের বিনিময়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করলেন বর্তমান মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু। লালমনিরহাট পৌরসভার গত দুই বারের নির্বাচিত মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. মতিয়ার রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম পাটোয়ারী ভোলা। সভায় সভপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি সিরাজুল হক, জেলা দপ্তর সম্পাদক সিরাজুল রানা ও নৌকা মার্কা প্রত্যাশী ও পৌর আ’লীগের সাধারন সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম তপনসহ জেলা আ’লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. মতিয়ার রহমান এর হাতে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের কপি তুলে দেন। পরে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. মতিয়ার রহমান মেয়রকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
মেয়র বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এবারো নৌকা প্রতীক দিয়েছিল। কিন্ত তাকে পরবর্তীতে ভুল বুঝিয়ে একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ১৩ তারিখ রাত ৯ টায় আমার মনোনয়নটি বাতিল করার সুপারিশ করেন। ফলে আমার মনোনয়ন পত্রটি বাতিল হয়।
মেয়র আরও বলেন, লালমনিরহাটে আমার পরিবার আওয়ামী রাজনীতির পরিবার। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা আমার বাপ চাচার হাত ধরে। আমি কখনও নৌকার সাথে বেঈমানী করিনি আর কোন দিন করবও না। বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার বাড়ী এসেছিল। তাই নেত্রীর এ সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীক প্রার্থীর পক্ষে একযোগে কাজ করব।
তিনি আরও বলেন, গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থী নৌকার মাঝি ভোলা পাটোয়ারীকে দিয়েছিল। কিন্তু একটি পক্ষ তারা আনারস প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে তাকে বিজয়ী করেন। তারা স্বার্থের রাজনীতি করে। তবে লালমনিরহাটে যদি আওয়ামীলীগের কোন লোক না পাওয়া যায় তাহলে আমি মাঠে থাকব একায়। কারন আমি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি ভাঙ্গব কিন্তু মচকাবো না।
তিনি আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধের সময় আমার বাড়ীতে এসেছিল এবং রাত্রী যাপন করেছিল। আমার বাবা আমার চাচা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমাদের বাড়িতে এসেছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর চলছে এ পরিবারটি আওয়ামীলীগকে ধরে রেখেছে। আমি আজ দায়িত্ব পেয়েছি। সামনের দিনেও আমি চেষ্টা করব দলকে আরও এগিয়ে নেয়ার।
মেয়র রিন্টু আরও বলেন আমি এ ১০ বছরে যা উন্নয়ন করেছি তা গত ৫০ বছরে হয়নি আগামী ৭০ বছরেও হবে না। আমি নৌকা প্রতীক না পেয়ে এবারো নমিনেশন জমা দিয়েছি তবে সেটি আজ প্রত্যাহার করলাম। তবে জেলা আওয়ামীলীগকে অনেক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই আমাকে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ দেয়ায়।
পরিশেষে বর্তমান মেয়র রিন্টু অপর মনোনয়ন প্রত্যাশি নজরুল ইসলাম তপন নৌকা প্রতীক প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেনের হাতে ফুলের তোরা দিয়ে তার পক্ষে কাজ করার কথা দেন।
পরে বিকেলে জেলা নির্বাচন অফিসার, লালমনিরহাট মঞ্জুরুল হাসান এর নিকট তার মনোনয়ন পত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেন।
উল্লখ্য, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী লালমনিরহাট পৌর নির্বাচনে এবারে মেয়র পদে ৬ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন। আজ ২৬ জানুয়ারী মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি বর্তমান মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু ও অপর মনোনয়ন প্রত্যাশি পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম তপন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন।
এছাড়া যে চারজন মেয়র পদে নির্বাচন করছেন তারা হলেন আ’লীগের (নৌকা) মোফাজ্জল হোসেন, বিএনপির (ধানেরশীষ) মোশারফ হোসেন রানা, জাপার (লাঙ্গল) ওয়াহিদুল হাসান সেনা, আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রেজাউল করিম স্বপন ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের (হাতপাখা) আমিনুর রহমান।
মোঃ রুবেল মিয়া, লালমনিরহাট প্রতিনিধি।
তারিখঃ ২৬/০১/২০২১।